মোঃ তরিকুল ইসলাম
প্রধান শিক্ষক, মেট্রো পুলিশলাইন হাইস্কুল, খুলনা
খুলনা মহানগরীর যে কয়টি বিদ্যাপীঠ অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষাদানের মানকে সুউচ্চ পর্যায়ে নিতে সফল হয়েছে তার মধ্যে মেট্রো পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয় অন্যতম। সঠিক নেতৃত্ব, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, শিক্ষক মন্ডলীর নিরলস শ্রম বিদ্যাপীঠকে উত্তরোত্তর সাফল্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা, সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের মনন বিকাশে এ বিদ্যাপীঠের সাফল্য চোখে পড়ার মত। দীর্ঘ পথ পরিক্রম ও নানা প্রতিকূলতার সাথে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠ সগৌরবে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমের মানকে সমুন্নত রেখে চলেছে। প্রতি বছরই এখান থেকে অসংখ্যা শিক্ষার্থী কৃতিত্ব এর সাথে পাশ করছে। স্থানীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের নানাবিধ স্বীকৃতি অর্জন করে শিক্ষার ব্রতকে গুণমুখী করে তুলেছে এ বিদ্যাপীঠটি। শিক্ষার পরিবেশ বান্ধব এ বিদ্যালয়টি আজ খুলনা মহানগরীতে একটি মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়টি ১৯৯৫ সালে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাহিনীর উদ্যোগে কিছু পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবল দ্বারা এবং কিছু শিক্ষক নিয়োগ করে তখনকার মান্যবর পুলিশ কমিশনার জনাব আঃ রহিম খান পিপিএম সেবা পুলিশ লাইনের মধ্যে একটি টিন সেড ব্যারাকের মধ্যে স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে বিদ্যালয় স্থানান্তর এর মাধ্যমে এবং নতুন ভবন নির্মাণের মাধ্যমে শিক্ষাদান চলমান আছে। বিদ্যালয়টি ১ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। এ বিদ্যালয়টি মহানগরীর খালিশপুর থানার অন্তর্গত ১৪নং ওয়ার্ডের বয়রা এলাকায় খুলনা মেট্রো পলিটন পুলিশ লাইন সংলগ্ন মুজগুন্নী মহাসড়কের পাশে কেডিএ থেকে প্রাপ্ত ১.৩২ একর জমির উপর অবস্থিত। বিদ্যালয়টিতে একটি তিনতলা ভবনসহ কিছু টিনসেড আছে এবং সরকার প্রদত্ত নতুন চারতলা ভবনের কাজ চলমান আছে। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচীর আলোকে বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ পদ্ধতিতে ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার পাঠদান অব্যাহত রয়েছে তার প্রমাণ হিসাবে ২০২০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে ৩০ জনের মধ্যে সকলে জিপিএ ৫.০০ এবং ২০২২ সালে ৪৫ জনের মধ্যে ৩৩ জন জিপিএ 0.00 সহ আজ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে ১০০% পাশ সহ প্রতিবছর অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে যা এলাকায় বেশ প্রশংসিত হচ্ছে।
প্রাথমিক শাখা নিবিড় পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রতিটি বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহন করে বছরে অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহন করে মূল্যায়ন করা হয় এবং উক্ত মূল্যায়নের উপর অভিভাবকদের সাথে মত বিনিময় আয়োজন করা হয়।
পাঠদানের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতামূলক পাঠ্যক্রম থাকে যা কেএমপি এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়মিত পরিদর্শন করে থাকেন। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসসহ সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম চলমান আছে। সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে মহানগরীতে বেশ সাফল্য অর্জন করে থাকে। সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম প্রতি শিক্ষার্থীকে উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ নিজেরা অংশগ্রহন করে শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রম আরও আকর্ষনীয় করে তোলেন। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগ তাই শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া কল্পনা করা যাক না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তথ্যের আদান প্রদান মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। পুঁথিগত বিদ্যায় পারদর্শী না হয়ে সৃজনশীল মেধা বিকাশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।